দুই বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে বিজেপি কর্মীরই আর্থিক প্রতারণার অভিযোগ দায়ের , চাঞ্চল‍্য রাজনৈতিক মহলে

14th July 2020 12:14 pm বর্ধমান
দুই বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে বিজেপি কর্মীরই আর্থিক প্রতারণার অভিযোগ দায়ের , চাঞ্চল‍্য রাজনৈতিক মহলে


প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় ( বর্ধমান )  :  দলেরই কর্মী সহ তার স্ত্রীকে চাকরি দেবার নাম করে ২ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠলো দুই বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে । ঘটনা প্রকাশ‍্যে আসতেই আলোড়ন পড়েছে পূর্ব বর্ধমানের রাজনীতিতে । খণ্ডঘোষের বিজেপি নেতাদের দুর্নীতির পর্দা ফাঁস করে দিলেন এক বিজেপি কর্মী ।

চাকরি দেবার টোপ দিয়ে বিজেপি কর্মীর কাছ থেকে ২ লক্ষ টাকা  হাতিয়ে নিয়ে আবার ওই বিজেপি কর্মীকেই খুনের হুমিকে দেবার অভিযোগ উঠেছে খণ্ডঘোষের দুই বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে । প্রতারিত বিজেপি কর্মী হেমন্ত রুইদাস ঘটনা সবিস্তার উল্লেখ করে দুই বিজেপি নেতা মহাদেব তা ও পিন্টু সাম এর বিরুদ্ধে খণ্ডঘোষ থানায় এফআইআর দায়ের করেছেন । ছবি : অভিযুক্ত দুই বিজেপি নেতা 

খণ্ডঘোষের সরঙ্গা গ্রামে বাড়ি প্রতারিত  বিজেপি কর্মী হেমন্ত রুইদাসের । প্রতারণার বিষয়ে  তিনি খণ্ডঘোষ থানায় গিয়ে দুই বিজেপি নেতা মহাদেব তা ও পিন্টু সাম এর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেন ।  পিন্টু সাম খণ্ডঘোষের ৪ নম্বর জেলাপরিষদ মণ্ডলের সাধারণ সম্পাদক । একই মণ্ডলে বিজেপির শক্তিকেন্দ্র প্রমুখ মহাদেব তা ।  বিজেপি কর্মী হেমন্ত রুইদাস লিখিত অভিযোগে পুলিশকে জানিয়েছে , পার্টি করার সুবাদে ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনের সময়ে তার সঙ্গে পরিচয় হয় মহাদেব তা ও পিন্টু  সামের। খণ্ডঘোষের সরঙ্গা গ্রামে বাড়ি বিজেপি নেতা  মহাদের তা এর । আর অপর বিজেপি নেতা পিন্টু সামের বাড়ি খণ্ডঘোষের আমরাল গ্রামে । হেমন্তর অভিযোগ ,“এই দুই বিজেপি নেতা তাঁর স্ত্রী মাম্পিকে আইসিডিএস এ এবং তাঁকে বন্ধন ব্যাঙ্কে  চাকরী করেদেবার প্রতিশ্রুতি দেয় । চাকরি করে দেবার জন্য  ৪ লক্ষ টাকা লাগবে বলে ওই দুই বিজেপি নেতা তাকে জানায় ।  হেমন্ত বলেন , দলেই দুই পদাধিকারী নেতার কথা তিনি বিশ্বাস করে ফেলেন । হেমন্ত বলেন , মহাদেব এরপর একদিন তাঁকে পিন্টুর কাছে নিয়েযায় ।চাকরি হয়েযাবে বলে সেখানে দুই বিজেপি নেতা পাকা কথা দেবার পর তিনি তাদের হাতে ২ লক্ষ টাকা দিয়েদেন । চাকরি হয়ে যাবার  পর বাকি ২ লক্ষ টাকা  দিয়ে দেবেন বলে হেমন্ত দুই বিজেপি নেতা পিন্টু সাম ও মহাদেব তা কে বলেছিলেন । হেমন্ত রুইদাস পুলিশকে জানিয়েছে , দুই বিজেপি নেতা তার কাছ থেকে ২ লক্ষ টাকা নিলেও এখনও চাকরির কোন ব্যবস্থা করে দেননি । তিনি টাকা ফেরৎ চাওয়ায় ওই দুই বিজেপি নেতা এখন তাঁকে প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে । এছাড়াও ওই দুই প্রতারক বিজেপি নেতা কখনও পুলিশ পরিচয় দিয়ে ফোন করে আবার কখনও উকিল পরিচয় দিয়ে ফোন করে তাঁকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দেবার ভয় দেখাচ্ছে । হেমন্ত রুইদাস এদিন অভিযোগে আরও বলেন ,তাঁর স্ত্রী মাম্পি রুইদাস হঠাৎ করে নিখোঁজ হয়েযাবায় ঘটনাতেও বিজেপি নেতা মহাদেব তা জড়িত রয়েছে । ” 

বিজেপি কর্মীর দায়ের করা এই অভিযোগের ভিত্তিতে খণ্ডঘোষ থানার পুলিশ প্রতারণা ও প্রাণ নাশের হুমকি  সহ একাধীক ধারার মামলা রুজু করে দুই বিজেপি নেতার খোঁজ শুরু করেছে । যে দুই বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে  আর্থিক প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে তাদের ফোন নম্বারে এদিন ফোন করেও যোগাযোগ করা যায়নি । ফোন  সুচই অফ থাকায়  তাদের কোন প্রতিক্রিয়া মেলেনি । 
এদিকে বিজেপি নেতাদের এমন প্ররতারণা কাণ্ড সামনে আসার পরেই প্রতিবাদে স্বোচ্চার হয়েছে খণ্ডঘোষের ব্লক তৃণমূলের  নেতা ও কর্মীরা । খণ্ডঘোষ ব্লক তৃণমূল সভাপতি অপার্থিব ইসলাম বলেন , ‘উপর তলা থেকে নিচু তলা পর্যন্ত সব বিজেপি নেতারাই চোর ও দুর্নীতিগ্রস্ত । সারা দেশ জুড়ে বিজেপি লুঠ চালাচ্ছে । নিজের দলের সাধারণ কর্মীদের কাছ থেকে টাকা লুঠ করতেও  কশুর করছে না বিজেপি নেতারা । এরথেকে বড় লজ্জার আর কি হতে পারে । ’ যদিও খণ্ডঘোষের বিজেপি পর্যবেক্ষক বিজন মণ্ডল দাবি করেছেন , ‘সব অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন । দুই বিজেপি নেতাকে ফাঁসাতে তৃণমূল চক্রান্ত করে এইসব মিথ্যা মামলা রুজু করিয়েছে । বিজন মণ্ডল জানিয়ে দেন,রাজনৈতিক ভাবেই তৃণমূলের এইসব চক্রান্তের মোকাবিলা করবে বিজেপি  । ’ 





Others News

MEMARI . একবছর আগে আবেদন করেও মেলেনি জাতিগত শংসাপত্র : হন‍্যে হয়ে ঘুরছেন মা

MEMARI . একবছর আগে আবেদন করেও মেলেনি জাতিগত শংসাপত্র : হন‍্যে হয়ে ঘুরছেন মা


প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় ( বর্ধমান ) : প্রায় এক বছর আগে আবেদন করেও মেয়ের জাতিগত শংসাপত্র মেলেনি । আবেদনকারীদের জাতি শংসাপত্র দেওয়ার
ক্ষেত্রে দেরি করা যাবেনা বলে জানিয়ে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।কিন্তু বাস্তবে ঠিক তার উল্টোটাই ঘটে চলেছে।প্রায় এক বছর আগে  চতুর্থ শ্রেণীতে পাঠরত মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পাওয়ার জন্য নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে  আবেদন করেছিলেন মা।কিন্তু মেয়ে কে পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তির সময় এগিয়ে আসলেও জাতি  শংসাপত্র আজও না মেলায় কার্যত হতাশ হয়ে পড়েছেন পূর্ব বর্ধমানের মেমারির রাধাকান্তপুর নিবাসী ঊর্মিলা দাস।ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য ঊর্মিলাদেবী বৃহস্পতি বার মেমারি ১ ব্লক বিডিও অফিসে লিখিত ভাবে আবেদন জানিয়েছেন। শংসাপত্র পাবার জন্য বিডিও সাহেব কি ব্যবস্থা করেন সেদিকেই এখন তাকিয়ে ঊর্মিলাদেবী। 

বিডিওকে লিখিত আবেদনে ঊর্মিলাদেবী জানিয়েছেন ,তাঁর স্বামী মানিক দাস দৃষ্টিহীন প্রতিবন্ধী ।বছর ১০ বয়সী তাঁদের একমাত্র কন্যা গ্রামের বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণীতে পাঠরত কালে তাঁর ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য তিনি নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চলতি বছরের ২৪ জানুয়ারী আবেদন করেছিলেন।  উর্মিলাদেবী বলেন ,তার পর থেকে দীর্ঘ সময় পেরিয়ে  গেলেও তিনি তাঁর মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পান না।মেয়ের পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তির সময় এগিয়ে আসায় গত অক্টোবর মাসের শেষের দিকে তিনি শংসাপত্রের বিষয়ে মেমারি ১ ব্লকের বিডিও অফিসে খোঁজ নিতে যান।জাতি শংসাপত্র বিষয়ের বায়িত্বে থাকা বিডিও অফিসের আধিকারিক তাঁকে অনলাইনে এই সংক্রান্ত একটি নথি বের করে আনতে বলেন । অনলাইনে সেই নথি বের করেনিয়ে তিনি ফের ওই আধিকারিকের কাছে যান । তা দেখার পর ওই আধিকারিক তাঁকে  ২০ দিন বাদে আসতে বলেন । ঊর্মিলাদেবী বলেন , তিনি ২৫ দিন বাদে যাবার পর ওই আধিকারিক তাঁকে গোপগন্তার ২ গ্রাম পঞ্চায়েতে গিয়ে খোঁজ নেবার কথা বলেন । তিনি এরপর গ্রামপঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে যান । নথি ঘেঁটে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেয় তাঁর মেয়ের নামে কোন ওবিসি শংসাপত্র পঞ্চায়েতে আসে নি।ঊর্মিলাদেবী দাবী করেন ,এই ভাবে তিনি একবার বিডিও অফিস , আবার পঞ্চায়েত অফিসে দরবার করে চলেন । কিন্তু তাতে কাজের কাজ কিছু হয় না। মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য  গত ১৩ ডিসেম্বর ফের তিনি বিডিও অফিসে যান ।ওই দিনও বিডিও অফিসের জাতি শংসাপত্র বিষয়ক বিভাগের আধিকারিক তাঁকে একই ভাবে পঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে যেতে বলে দায় সারেন। পরদিন তিনি পঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে গেলে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ ফের জানিয়ে দেয় তাঁর মেয়ের নামে  ওবিসি শংসাপত্র পঞ্চায়েতে আসে নি । কেন মেয়ের জাতি শংসাপত্র পাচ্ছেন না সেই বিষয়ে  না পঞ্চায়েত না ব্লক প্রশাসনের কর্তৃপক্ষ কেউই তাঁকে কিছু জানাতে পারেন । ঊর্মিলাদেবী বলেন ,পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তির আগে তার মেয়ে যাতে ওবিসি শংসাপত্র পেয়ে যায় তার ব্যবস্থা করার জন্য এদিন তিনি বিডিওর কাছে লিখিত ভাবে আবেদন জানিয়েছেন । মেমারী ১ ব্লকের বিডিও আলী মহম্মদ ওলি উল্লাহ এদিন বলেন ,“জাতি শংসাপত্র পাবার জন্য হাজার হাজার আবেদন জমা পড়ছে । তবে ঊর্মিলাদেবীর কন্যা দ্রুত যাতে বিবিসি শংসাপত্র দ্রুথ পান সেই বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে “। মেমারির বিধায়ক মধুসূদন ভট্টাচার্য্য বলেন,’মেমারি  বিধানসভা এলাকার আবেদনকারীরা দ্রুত যাতে জাতি শংসাপত্র পান সেই বিষয়ে প্রশাসনকে আরও তৎপর হওয়ার কথা বলবো’।