প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় ( বর্ধমান ) : দলেরই কর্মী সহ তার স্ত্রীকে চাকরি দেবার নাম করে ২ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠলো দুই বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে । ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই আলোড়ন পড়েছে পূর্ব বর্ধমানের রাজনীতিতে । খণ্ডঘোষের বিজেপি নেতাদের দুর্নীতির পর্দা ফাঁস করে দিলেন এক বিজেপি কর্মী ।
চাকরি দেবার টোপ দিয়ে বিজেপি কর্মীর কাছ থেকে ২ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়ে আবার ওই বিজেপি কর্মীকেই খুনের হুমিকে দেবার অভিযোগ উঠেছে খণ্ডঘোষের দুই বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে । প্রতারিত বিজেপি কর্মী হেমন্ত রুইদাস ঘটনা সবিস্তার উল্লেখ করে দুই বিজেপি নেতা মহাদেব তা ও পিন্টু সাম এর বিরুদ্ধে খণ্ডঘোষ থানায় এফআইআর দায়ের করেছেন । ছবি : অভিযুক্ত দুই বিজেপি নেতা
খণ্ডঘোষের সরঙ্গা গ্রামে বাড়ি প্রতারিত বিজেপি কর্মী হেমন্ত রুইদাসের । প্রতারণার বিষয়ে তিনি খণ্ডঘোষ থানায় গিয়ে দুই বিজেপি নেতা মহাদেব তা ও পিন্টু সাম এর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেন । পিন্টু সাম খণ্ডঘোষের ৪ নম্বর জেলাপরিষদ মণ্ডলের সাধারণ সম্পাদক । একই মণ্ডলে বিজেপির শক্তিকেন্দ্র প্রমুখ মহাদেব তা । বিজেপি কর্মী হেমন্ত রুইদাস লিখিত অভিযোগে পুলিশকে জানিয়েছে , পার্টি করার সুবাদে ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনের সময়ে তার সঙ্গে পরিচয় হয় মহাদেব তা ও পিন্টু সামের। খণ্ডঘোষের সরঙ্গা গ্রামে বাড়ি বিজেপি নেতা মহাদের তা এর । আর অপর বিজেপি নেতা পিন্টু সামের বাড়ি খণ্ডঘোষের আমরাল গ্রামে । হেমন্তর অভিযোগ ,“এই দুই বিজেপি নেতা তাঁর স্ত্রী মাম্পিকে আইসিডিএস এ এবং তাঁকে বন্ধন ব্যাঙ্কে চাকরী করেদেবার প্রতিশ্রুতি দেয় । চাকরি করে দেবার জন্য ৪ লক্ষ টাকা লাগবে বলে ওই দুই বিজেপি নেতা তাকে জানায় । হেমন্ত বলেন , দলেই দুই পদাধিকারী নেতার কথা তিনি বিশ্বাস করে ফেলেন । হেমন্ত বলেন , মহাদেব এরপর একদিন তাঁকে পিন্টুর কাছে নিয়েযায় ।চাকরি হয়েযাবে বলে সেখানে দুই বিজেপি নেতা পাকা কথা দেবার পর তিনি তাদের হাতে ২ লক্ষ টাকা দিয়েদেন । চাকরি হয়ে যাবার পর বাকি ২ লক্ষ টাকা দিয়ে দেবেন বলে হেমন্ত দুই বিজেপি নেতা পিন্টু সাম ও মহাদেব তা কে বলেছিলেন । হেমন্ত রুইদাস পুলিশকে জানিয়েছে , দুই বিজেপি নেতা তার কাছ থেকে ২ লক্ষ টাকা নিলেও এখনও চাকরির কোন ব্যবস্থা করে দেননি । তিনি টাকা ফেরৎ চাওয়ায় ওই দুই বিজেপি নেতা এখন তাঁকে প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে । এছাড়াও ওই দুই প্রতারক বিজেপি নেতা কখনও পুলিশ পরিচয় দিয়ে ফোন করে আবার কখনও উকিল পরিচয় দিয়ে ফোন করে তাঁকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দেবার ভয় দেখাচ্ছে । হেমন্ত রুইদাস এদিন অভিযোগে আরও বলেন ,তাঁর স্ত্রী মাম্পি রুইদাস হঠাৎ করে নিখোঁজ হয়েযাবায় ঘটনাতেও বিজেপি নেতা মহাদেব তা জড়িত রয়েছে । ”
বিজেপি কর্মীর দায়ের করা এই অভিযোগের ভিত্তিতে খণ্ডঘোষ থানার পুলিশ প্রতারণা ও প্রাণ নাশের হুমকি সহ একাধীক ধারার মামলা রুজু করে দুই বিজেপি নেতার খোঁজ শুরু করেছে । যে দুই বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে আর্থিক প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে তাদের ফোন নম্বারে এদিন ফোন করেও যোগাযোগ করা যায়নি । ফোন সুচই অফ থাকায় তাদের কোন প্রতিক্রিয়া মেলেনি ।
এদিকে বিজেপি নেতাদের এমন প্ররতারণা কাণ্ড সামনে আসার পরেই প্রতিবাদে স্বোচ্চার হয়েছে খণ্ডঘোষের ব্লক তৃণমূলের নেতা ও কর্মীরা । খণ্ডঘোষ ব্লক তৃণমূল সভাপতি অপার্থিব ইসলাম বলেন , ‘উপর তলা থেকে নিচু তলা পর্যন্ত সব বিজেপি নেতারাই চোর ও দুর্নীতিগ্রস্ত । সারা দেশ জুড়ে বিজেপি লুঠ চালাচ্ছে । নিজের দলের সাধারণ কর্মীদের কাছ থেকে টাকা লুঠ করতেও কশুর করছে না বিজেপি নেতারা । এরথেকে বড় লজ্জার আর কি হতে পারে । ’ যদিও খণ্ডঘোষের বিজেপি পর্যবেক্ষক বিজন মণ্ডল দাবি করেছেন , ‘সব অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন । দুই বিজেপি নেতাকে ফাঁসাতে তৃণমূল চক্রান্ত করে এইসব মিথ্যা মামলা রুজু করিয়েছে । বিজন মণ্ডল জানিয়ে দেন,রাজনৈতিক ভাবেই তৃণমূলের এইসব চক্রান্তের মোকাবিলা করবে বিজেপি । ’